প্রাথমিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশ জমতিয়েন ঘোষণার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা শুধুমাত্র অর্জনই করেনি বরং অনেকক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে গেছে। গত শতাব্দীর শেষ দশকে কমবেশী প্রাথমিক শিক্ষার পরিমানগত দিকের অগ্রগতি হয়েছে। শেষ দশকের পর থেকে প্রাথমিক শিক্ষার পরিমানগত এবং গুনগত উভয় দিকের উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে প্রবলভাবে জোর দেয়া হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান অর্জনের দিকে।
বাংলাদেশ সরকার (এঙই) বিশ্ব শিক্ষা ফোরামে (ডাকার, এপ্রিল ২০০০) সবার জন্য শিক্ষার (ঊঋঅ) নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫ সনের মধ্যে অর্জনের অঙ্গীকার করেছে। ডাকার ফ্রেমওয়ার্কে যে সকল লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তানি¤œরুপ:
ক. বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ এবং অনগ্রসর শিশুদের শৈশবের যতœ ও শিক্ষার ব্যপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ;
খ. ২০১৫ সনের মধ্যে সব শিশু বিশেষকরে মেয় শিশুদের গুরুত্ব দান, কঠিন পরি¯িহতিতে পতিত শিশু এবং জাতিগত সংখ্যালঘু শিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ও মানসম্মত, অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের সুযোগ নিশ্চিত করা;
গ. সব অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের এবং বয়স্ক জনগনের শিখনের প্রয়োজনের নিরিখে যথাযথ শিক্ষা ও জীবনধর্মী দক্ষতা কর্মসূচির সমান সুযোগ নিশ্চিত করা;
ঘ. বয়স্ক জনগনের বিশেষকরে মহিলাদের সাক্ষরতার হার ৫০ শতাংশে উন্নীতকরণ, এবং বয়স্ক জনগনের জন্য মৌলিক ও অব্যাহত শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা;
ঙ. ২০০৫ সনের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্য্যায়ের শিক্ষার ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা, এবং ২০১৫ সনের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্জন করা, মেয়েদের গুরুত্ব দিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে মানসম্মত মৌলিক শিক্ষা অর্জন;
চ. মানসম্মত শিক্ষার সকল দিকের উন্নতি এবং উৎকর্ষ নিশ্চিত করা যাতে সবাই স্বীকৃত ও পরিমাপযোগ্য শিখনফল অর্জন করতে পারে বিশেষ করে সাক্ষরতা (লিটারেসী), গণনা (নিউমেরেসী) এবং জীবন দক্ষতা সংক্রান্ত;
এই সাপেক্ষে, ডাকার ফ্রেমওয়ার্ককে ভিত্তি ধরে, বাংলাদেশ ২০১৫ সনের মধ্যে অর্জিতব্য সবার জন্য শিক্ষার সুনির্ধিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সবার জন্য শিক্ষার খসড়া ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন (ঘচঅ) প্রনয়ণ করে। সবার জন্য শিক্ষার (২০০৩-২০১৫) এই ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশনে সবগুলো লক্ষ্যই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি ও শিক্ষাদান করা যায়।
প্রাথমিক শিক্ষার পরিমানগত এবং গুনগত মান উন্নয়নের সবগুলো চলমান প্রকল্প জুন, ২০০৪ সনে সম্পন্ন হয়। অত:পর ডাকার ফ্রেমওয়ার্কের ভিত্তিতে এই দেশে দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (চঊউচ-ওও) হাতে নেয়া হয় এবং ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশনের প্রস্তাব করা হয়। দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচীর (২০০৩-২০০৮) প্রধান উদ্দেশ্য নি¤œরুপ:
দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য:
ক. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনের সুযোগ, অংশগ্রহন এবং সমাপণী বৃদ্ধি যা সরকারের পলিসি এবং সবার জন্য শিক্ষা ও অন্যান্য অঙ্গিকারের সংগে সপৃক্ত
খ. শিক্ষার্থীদের শিখনের অগ্রগতি এবং আউটকামস্রে পারফরমেন্স (অর্থাৎ)
দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্দেশ্যাবলী:
ক. সকল শিশুর জন্য মান সম্মত শিক্ষা প্রবর্তন। যদিও বর্তমানে সরাসরি বেশী নজর দেয়া হচ্ছে সরকারি ও বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, তবে তা সকল বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর উপরই প্রভাব ফেলবে।
খ. বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু সহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী বয়সী সব শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা।
গ. আগাম শিক্ষা সংস্কারের প্রচারণা বিশেষভাবে: সংঙ্গা নির্ধারণ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্য্যায়ে শিক্ষা সংক্রান্ত পরিষেবার নূন্যতম মান বাস্তবায়ন, যা পরিষেবা প্রদানের সুযোগ ও মান সম্পর্কে আলোকপাত করবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং অন্যান্য যাদের প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে তাঁদের জন্য যথোপযোক্ত ক্যারিয়ার পথ ও উপযুক্ত পদবী নির্ধারণ।
প্রতিষ্টানের দক্ষতা বা ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা এবং পদ্ধতিগতভাবে পরিবর্তন আনায়ন, প্রথম ও দ্বিতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অধীন উন্নত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাব¯হাপনা এবং পরিবীক্ষণ অব্যাহত রাখার জন্য পলিসির সাথে সাদৃশ্য ক্ষমতা ও দায়িত্ব বিকেন্দ্রীকরণ করা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস